মহালয়া এমন একটা দিন যার জন্য অপেক্ষা করে থাকে হাজারো বাঙালি। আবার অনেকেই অপেক্ষা করে থাকেন টিভিতে সম্প্রচারিত মহালয়ার বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠান গুলির জন্য যেখানে মা দুর্গার নানান রকমের লীলা তুলে ধরা হয়।। আর তার অবিচ্ছেদ অঙ্গ যিনি ছিলেন তার বর্তমানে অবস্থা আপনাকে চমকে দিতে পারে, একসময় তার হাসিতে কাঁপতো টেলিভিশন। অসুর কিংবা যমরাজের ভূমিকায় তাকে টিভির পর্দায় দেখে রীতিমত ভয়ে সিটিয়ে যেত শিশুরা। মহালয়ার সকালে অমল অসুরের অভিনয় ছিল দেখার মত। কিন্তু এখন সেই মহিষাসুরেরই অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে।
মাথা ভর্তি কোঁকড়া চুল, পেশিবহুল বিরাট আকারের চেহারা, মোটা গোঁফ, ভ্রূ নিয়ে ৯০ এর দশকে দূরদর্শনে অসুরের ভূমিকায় দাপিয়ে বেড়াতেন অমল চৌধুরী। শুধু মহালয়া নয়, আরো অনেক কাজই করেছেন তিনি সেই সময়। কিন্তু তাঁরই এখন ভাগ্যের পরিহাসে অভাবে দিন কাটছে। আর এই বিষয়টা সোশ্যাল মিডিয়ার নেটিজেনদের ভীষণভাবে অবাক করেছে তবে এর পিছনে রয়েছে নানান কারণ।
উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অমল বাবু হঠাৎ করেই একদিন দুজন টেকনিশিয়ানের নজরে আসেন। তারপরেই তার কাছে যায় প্রস্তাব। সে প্রস্তাব লিখে নিয়ে সেই সময় নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন এই বৃদ্ধ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে ভাগ্য।তবে মাঝে একবার টলিউড থেকে ডাক পড়েছিল বটে। কিন্তু দুর্ঘটনায় শারীরিক অসুস্থতা থাকায় তিনি কাজ করতে পারেননি। এখন একা একাই কোনও রকম দিন কাটছে তার।
অমল বাবুর এক দাদা ছিলেন, বেশ কয়েক বছর হয়েছে তিনি মারা গিয়েছেন। ছিলেন এক বোনও। কিন্তু সেও তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। এখন কোনরকমে আঁকার টিউশনি করিয়ে দিন কাটছে তার। কোনদিন পেট ভরে খাবার জোটে, আবার কোনদিন আধপেটে খেয়ে থাকতে হয় আবার কোনদিন তো শুধু জল খেয়েই শুয়ে পড়েন তিনি। বয়সের ভারে আর নিয়তির ফেরে কোনরকমে রঙিন স্বপ্ন চোখে নিয়ে ফ্যাকাসে জীবন কাটাচ্ছেন অমল চৌধুরী।
সব মিলিয়ে তার এই অবস্থা থেকে রীতিমতো চোখে জল এসেছেন নেটিজেনদের।