কঠোর পরিশ্রম আর অদম্য জেদ দিয়ে সারা দেশের সামনে বাংলাকে গর্বিত করলেন বাঙালি কন্যা!

সারা দেশের সামনে বাংলার নাম গর্বিত করল পুরুলিয়ার ভূমিকন্যা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার কাশিপুর থানার অন্তর্গত সোনাইজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভালাগোড়া গ্রামের বাসিন্দা ইতি মাহাত। বাবা পেশায় স্কুল শিক্ষক ও মা গৃহিণী। তার দিদি সেবা মাহাত বলরামপুর সার্কেলের স্কুলের এসআই। ইতি মাহাত ছোটবেলা থেকে সোনাইজুড়ি আঞ্চলিক হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন মাধ্যমিক পর্যন্ত। মাধ্যমিক স্তরে তার নম্বর হয়েছিল ৯১.৭১ শতাংশ। কোনওরকম টিউশন, শিক্ষক ছাড়াই ইতি মাহাত পড়াশোনা করেছেন মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত। ‌‌‌ তখনো পর্যন্ত হয়তো কেউ জানতো না যে ঠিক কোন পথে যাচ্ছে পুরুলিয়ার এই ভূমিকন্যা।

আইআইটি প্রবেশিকার সর্বভারতীয় স্তরে ১৪তম স্থান পেয়ে পুরুলিয়া নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে দিল পুরুলিয়ার ভূমিকন্যা ইতি মাহাত। তার দুর্দান্ত রেজাল্টে তাক লেগেছে মানভূমের মানুষদের। ‌রঘুনাথপুর কলেজের রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সে।মঙ্গলবার আইআইটি জয়েন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট ফর মাস্টার্স -এর ফলাফল ঘোষণা হয় , আর তাতেই প্রকাশিত হয় ইতি মাহাত ১৪তম স্থান অর্জন করেছে সর্বভারতীয় স্তরে। তার এই দুর্দান্ত রেজাল্টে খুশি পরিবারের সদস্যরা সহ তার শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

```

পড়াশোনার ক্ষেত্রে বাবা তাঁকে যথাযথ সহযোগিতা করতেন। এরপর বাঁকুড়ার কমলপুর নেতাজি হাই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয় সে। উচ্চমাধ্যমিকে তার নম্বর হয়েছিল ৯০.৮ শতাংশ। বর্তমানে রঘুনাথপুর কলেজে রসায়ন বিভাগে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করছে সে। আগামী দিনে রসায়ন নিয়ে উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা রয়েছে।শিল্প সংস্কৃতির উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা ক্ষেত্রেও প্রতিনিয়ত এগিয়ে আসছে পুরুলিয়া। এই জেলারই ইতি মাহাতর এ হেন দুর্দান্ত রেজাল্ট জেলার মানুষের গর্বিত করেছে।

রঘুনাথপুর কলেজের অধ্যক্ষ ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলেজের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণেই ইতি সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১৪ র‌্যাঙ্ক করেছেন। এটা যেমন তাঁরা মেধার প্রমাণ, তেমনই কলেজের পঠনপাঠনের মানের ছবিও তুলে ধরেছে। ইতি অন্যদের কাছে দৃষ্টান্ত।’’বাবা ভীমচন্দ্র মাহাতো সোনাইজুড়ি হাই স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক। মা কল্যাণী মাহাতো গৃহবধূ। বাবা ভীমচন্দ্র বলেন, ‘‘মেয়ের বিজ্ঞানের প্রতি ঝোঁক থাকায় তাকে কমলপুর নেতাজি হাই স্কুলে ভর্তি করেছিলাম। লেখাপড়ার জন্য যতটা সম্ভব ওকে সহায়তা করেছি। গ্রামের গণ্ডি ছাড়িয়ে এবার তাকে সর্বভারতীয় স্তরে পড়াশোনা করতে যেতে হবে। বড় হয়ে দেশের সেবা করলে আমাদের স্বপ্ন পূরণ হবে।’’

```

সর্বভারতীয় স্তরে পুরুলিয়ার নাম অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে পড়ুয়ার এই দুর্দান্ত রেজাল্ট এর ফলে। আগামী দিনে পুরুলিয়ার ভূমিকন্যা মানভূমির মাটিকে আরও বিকশিত করবে এমনটাই আশা করা যাচ্ছে। ‌সব মিলিয়ে পুরো দেশের সামনে বাংলাকে গর্বিত করলেন এই বাঙালি কন্যা।