মুড়ি বিক্রি করে ছেলেকে মানুষ করেন গরীব বাবা! ছেলে যা করে দেখালেন,গর্ব সারা বাংলার,স্যালুট নেটিজেনদের

সারা জীবন মুড়ি ব্যবসা করে গিয়েছেন মেদিনীপুর শহরের পালবাড়ির বাসিন্দা বিষ্ণুপদ ওঝা। কিন্তু ছেলের পড়াশুনায় এতটুকু গাফিলতি করেননি তিনি। ছোট থেকে ভবিষ্যৎ নিয়ে মনোযোগী ছিলেন বিশ্বজিৎও। একসময় নাসায় গিয়ে গবেষণার স্বপ্ন দেখতেন বিশ্বজিৎ। মেদিনীপুর শহরের রামকৃষ্ণ মিশন স্কুল থেকে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন বিশ্বজিৎ। এরপর খড়্গপুর কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী থেকে ফিজিক্স নিয়ে মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন বিশ্বজিৎ।

এবার মেদিনীপুরের বিশ্বজিৎ নাসাতে। বছর দুয়ের আগে নাসায় গবেষণার ইচ্ছা প্রকাশ করে আবেদন জানিয়েছিলেন মেদিনীপুরের বিশ্বজিৎ ওঝা। সেসময় সোলার উইন্ড কন্ট্রোল অফ ওয়েভ অ্যাকটিভিটি ইন দি ম্যাগনেটোস্ফিয়ার নিয়ে প্রজেক্ট তৈরী করে গবেষণা করতে চেয়েছিলেন তিনি। আর সেই গবেষণার জন্যই নাসা থেকে ডাক পেলেন বিশ্বজিৎ।এবার সেই স্বপ্নই পূরণ হতে চলেছে বলে মনে করছে বিশ্বজিতের পরিবার। মুম্বাইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ জিওম্যাগনেটিসম (IIG) তে তার তরঙ্গ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন তিনি।

বরাবরই তিনি তরঙ্গ নিয়ে গবেষণা করতে চেয়েছিলেন। বিশ্বজিৎ জনিয়েছেন যে তার গবেষণার বিষয় হল তরঙ্গ। পৃথিবীর বাইরে প্রায় 6 হাজার কিমি দূরে রয়েছে পৃথিবীর রেডিয়েশন বেল্ট। আবার প্রায় 18/24 হাজার কিমি দূরে সৌর জগৎ ও মহাকাশের বিভিন্ন দিক থেকে আসা প্রচুর হাই এনার্জি পার্টিক্যাল পৃথিবীর দিকে আসে। কিন্তু সেই সব হাই এনার্জি পার্টিক্যালগুলি বিভিন্ন তরঙ্গে বাধাপ্রাপ্ত হয়। ওই তরঙ্গ গুলোর কাজই হচ্ছে, পৃথিবী পৃষ্ঠে আসা আটকাতে হাই এনার্জি পার্টিক্যালগুলিকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া। আর এখানেই বিশ্বজিতের লক্ষ্য হচ্ছে, সেই তরঙ্গ গুলিকে চিহ্নিত করে স্যাটেলাইট রক্ষা করা।

সংশ্লিষ্ট গবেষণাটি সফল হলে একদিকে যেমন বিভিন্ন হাই এনার্জি পার্টিক্যালকে পৃথিবীর দিকে আসতে আটকানো যাবে, তেমনই পৃথিবীর চারপাশে যে হাজার হাজার স্যাটেলাইট ঘুরছে, সেগুলির ক্ষতি হওয়া আটকানো যাবে বলেও জানিয়েছেন বিশ্বজিৎ। ইতিমধ্যেই নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানী ডেভিড সাইব্যাকের সঙ্গে ম্যাগনেটোস্ফিয়ার নিয়ে গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছেন মেদিনীপুরের বিশ্বজিৎ ওঝা।

ছেলের সাফল্যে গর্বিত বিশ্বজিতের বাবাও। এপ্রসঙ্গে বিষ্ণুপদ ওঝা বলেন, “ছেলে যে লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তা পূরণ হোক এবং দেশের জন্য তার ছেলে কিছু করে দেখাক।”পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরে নিজের গবেষণার মাধ্যমে মেদিনীপুরের নাম উজ্জ্বল করতে চান বলেই জানিয়েছেন বিশ্বজিৎও।