কৃষকের ছেলে শুভজিৎ,বাবার মুখে হাসি ফোটাতে কঠোর পরিশ্রমে যা করে দেখালেন;স্যালুট নেটিজেনদের

গরিব নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে আজ স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে পাড়ি দিচ্ছে ভিন দেশে । লক্ষ্য, দেশের জন্য নতুন কিছু করা । যা মানুষের উপকারে ব্যবহৃত হবে ।

উত্তর দিনাজপুরের কৃষকের ছেলে শুভজিৎ গবেষণা করতে যাচ্ছেন মালয়েশিয়া।

```

করণদিঘি ব্লকের প্রত্যন্ত বিকনপুর গ্রাম । এই গ্রামেই ছোট থেকে বড় হয়েছেন শুভজিৎ সরকার । তাঁর বাবা শংকর সরকার পেশায় কৃষক । শুভজিতের শিক্ষাজীবন শুরু হয় গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়েই । এখান থেকে আর পাঁচটা পড়ুয়ার মতোই ধাপে ধাপে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরনো ৷ স্নাতকোত্তর শেষ করে শুরু হয় গবেষণা । আর এই গবেষণার জন্যই বিকনপুরের শুভজিৎ ডাক পেয়েছেন সুদূর মালয়েশিয়াতে । কুয়ালালামপুরে মালায়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সুযোগ পেয়েছেন তিনি । তাঁর গবেষণার বিষয়বস্তু সিন্থেটিক অর্গানিক কেমিস্ট্রির সঙ্গে লিক্যুইড ক্রিস্টাল।

```

শুভজিৎ জানান, প্রথমে তিনি তাঁর গবেষণার প্রাথমিক বিষয়বস্তু মালয়েশিয়ার গাইডকে পাঠান । তিনি পুরো বিষয়টি যাচাই করে সবুজ সংকেত দেন । এর 7-8 মাস বাদে মালায়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন শুভজিৎ । অবশেষে সেখান থেকে ডাক আসে তাঁর কাছে । এর জন্য ভারত সরকারের থেকে ফেলোশিপও পান তিনি । শুভজিৎ জানিয়েছেন, 3 বছরের জন্য মোট 1 কোটি 25 লক্ষ টাকা ফেলোশিপ পেয়েছেন তিনি ।

শুভজিতের বাড়িতে মা, বাবা, ভাই, বোন রয়েছে । নিম্নবিত্ত পরিবারের পক্ষে তাঁর উচ্চশিক্ষার খরচ জোগানো সম্ভব ছিল না । উচ্চমাধ্যমিকের পর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকা, অধ্যাপকদের সহায়তায় এতদুর এগিয়েছেন তিনি । সেই সঙ্গে তাঁর দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বিধায়ক, বিডিও, আইসি-সহ বহু সহৃদয় মানুষ । আগামীতে ফিরে এসে দেশের জন্য ও দশের জন্য নতুন নতুন গবেষণায় জীবন উৎসর্গ করার স্বপ্ন দেখেন শুভজিৎ ।

ছেলের সাফল্যে যারপরনাই গর্বিত তাঁর বাবা শংকর সরকার । তিনি বলেন, ছেলের জন্য সেভাবে কিছু করতে পারেননি ৷ তাই সকলের সহায়তা নিয়ে ছেলেকে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় উৎসাহ জুগিয়েছেন । ছেলে মানুষের মতো মানুষ হোক, এটাই তাঁর আশা ।

শুভজিৎকথায় বলে, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয় । কঠোর অধ্যাবসায়, মনের জোর ও স্বপ্নপূরণে সঠিক পথ বেছে নিলে সব প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে যে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছনো সম্ভব, তা আরও একবার প্রমাণ করলেন প্রত্যন্ত এলাকার এই তরুণ তুর্কী ।