রাতারাতি কোটিপতি! অবাক লাগলেও, এটাই বাস্তব৷ নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কয়েক কোটি টাকা দেখে ভিরমি খাওয়ার জোগাড় সুদীপ্ত হাজরার। কার সহায়তায় হঠাৎ কোটিপতি বনে গেলেন তিনি?
সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) হাবরার বাসিন্দা সুদীপ্তর। রাতারাতি কোটিপতি হয়ে খুশির বদলে চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন তিনি৷ সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়েছেন থানায় অ্যাকাউন্টে রাতারাতি কোটি টাকা ঢোকার খবর জানাতে৷ ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টটিও ব্লক করে দিয়েছেন তিনি৷ তবে এই টাকা তিনি রাজ্যকে ফিরিয়ে দিতে চাইলেও তাঁর দাবি, সেখান থেকে সরকার তাঁকে অন্তত কিছু দিয়ে সব নিয়ে নিক৷
লটারি জিতে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যান অনেকেই। এটা নতুন কিছু নয়৷ তবে হঠাৎই যদি ব্যাঙ্কে চলে আসে কোটি-কোটি টাকা, তাহলে হতবাক হতে বাধ্য ওই অ্যাকাউন্ট হোল্ডার। উত্তর ২৪ পরগনার হাবরার নাংলা গ্রামের বাসিন্দা সুদীপ্ত হাজরার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। হঠাৎই সোমবার তিনি দেখেন, তাঁর বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে চলে এসেছে বিপুল অঙ্কের টাকা। যা দেখে রীতিমত হতবাক তিনি। কী ভাবে এত টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকল, তা কোনওভাবেই ভেবে পাচ্ছেন না সুদীপ্ত।
মাঠে-ঘাটে কাজ করে কোনওক্রমে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই সংসার চালান সুদীপ্ত হাজরা৷ সেখানে হঠাৎই এতগুলো টাকা অ্যাকাউন্টে ঢোকায় স্বাভাবিকভাবেই অদ্ভুত এক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন তিনি। সোমবার গাড়ির মাসিক কিস্তি দেওয়ার জন্য অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে গিয়ে ব্যাঙ্কের মিনি স্টেটমেন্ট দেখেই সুদীপ্ত জানতে পারেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে প্রচুর টাকা ঢুকেছে। তবে সেই টাকার উৎস কী, তা বুঝতে উঠতে না পারায় সোজা থানায় চলে যান তিনি৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ ব্লক করে দেওয়া হয়েছে তাঁর অ্যাকাউন্টটিও৷ এব্য়াপারে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।
উর্মিলা হাজরা নামে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘টাকাটা কী ভাবে ঢুকেছে ও (সুদীপ্ত) জানে না৷ বাইরে ছিল, মা মারা যাওয়ার পর বাড়ি চলে আসে৷ এখন আর কাজে যায় না৷ মাঠে কাজ করে৷ গতকাল গাড়ির কিস্তি দেবে বলে টাকা তুলতে গিয়ে দেখে এত টাকা অ্যাকাউন্টে৷ এরপরই থানায় যায়৷ ও তো ভয়েই কাঁপছে৷ প্রথমে তো আমরা ওর কথা শুনে বিশ্বাসই করিনি৷ তারপর গিয়ে দেখলাম সত্যি বলছে৷ ব্যাঙ্ক থেকেও বলেছে এত টাকা ঢুকেছে৷ অ্যাকাউন্টটি ব্লক করে দিয়েছে ও৷’’
এত টাকা কোনও দিন চোখেও দেখেননি দিনমজুর সুদীপ্ত। স্বপ্নেও কখনও এত টাকার কথা ভাবেননি তিনি৷ অথচ তাঁর অ্যাকাউন্টে এখন কোটি কোটি টাকা৷ বিষয়টি এখনও সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করতে পারছেন না সুদীপ্তবাবু। এই খবর জানাজানি হতেই ইতিমধ্যেই তাঁর বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন পাড়া-প্রতিবেশীরা৷ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। সাদামাটা সুদীপ্ত নিজেই বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে বর্তমানে কোটিপতি সুদীপ্ত হাজরার আবেদন, ‘‘সরকার অন্তত আমাকে কিছুটা দিয়ে বাকি সব টাকা নিয়ে নিক৷’’