দেশে চলাচল করা সমস্ত ট্রাকে চালকের বসার জায়গা বা কেবিন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়া বাধ্যতামূলক। ঘোষণা কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর। বিদেশি ট্রাক প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি আগে থেকেই ট্রাকে চালকের কেবিন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করলেও ভারতীয় ট্রাক প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি সে পথে হাঁটেনি। কিন্তু নিয়ম চালু হওয়ার পর তাদেরও বাধ্যতামূলক ভাবে হাঁটতে হবে ভলভো, স্ক্যানিয়ার দেখানো পথেই।ভারতের পণ্য পরিবহণে ট্রাকের জুড়ির মেলা ভার। পরিস্থিতি যেমনই হোক, রাস্তা থাকুক বা না থাকুক, মালবোঝাই ট্রাক ঠিকই পৌঁছে যাবে গন্তব্যে। কিন্তু কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে ট্রাক চালাতে হয় চালকদের?
সাম্প্রতিক ভারতে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তনের জেরে বছরের একটা সময় ট্রাক চালকদের ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রায় গাড়ি ছোটাতে হয়। একে তো বাইরের গরম, তার উপর ইঞ্জিনের তাপ— দু’য়ে মিলে চালকের কেবিন যেন নরকবাসের অভিজ্ঞতা। তার মধ্যে বসেই ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা একটানা ট্রাক চালিয়ে যান চালকরা। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই কারণে পথে ট্রাক দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও অনেকটা বৃদ্ধি পায়। বহু ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার পর দেখা যায়, চালকের শ্রান্তির কারণেই ঘটেছে তা। এ বার সেই প্রবণতায় বদল আসতে চলেছে।
সোমবার গডকড়ী বলেন, ‘‘আমাদের দেশে কিছু ট্রাক চালককে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা ধরে ট্রাক চালাতে হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আইন আছে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর আর চালকদের স্টিয়ারিংয়ে বসতে দেওয়া হয় না। আমাদের এখানে এ সব কিছুই নেই। আমাদের চালকরা ৪৩ থেকে ৪৭ ডিগ্রির গরমে গাড়ি চালিয়ে গন্তব্যে পণ্য পৌঁছে দেন। আমি মন্ত্রী হওয়ার পর ড্রাইভার কেবিনে এসি বসাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই সময় অনেকেই আমার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। তাঁরা বলেছিলেন, এতে খরচ নাকি বিপুল বেড়ে যাবে। আজ (সোমবার) আমি ফাইলে সই করে দিলাম। সমস্ত ট্রাকে চালকের কেবিনে এসি বাধ্যতামূলক করা হল।’’
প্রসঙ্গত, ভলভো বা স্ক্যানিয়ার মতো বিদেশি ট্রাক প্রস্তুতকারক সংস্থা দীর্ঘদিন আগে থেকেই ট্রাকে চালকের কেবিনে এসি বসানো বাধ্যতামূলক করেছে। কিন্তু খরচ বৃদ্ধির ভয়ে ভারতীয় ট্রাক প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি (টাটা মোটরস, অশোক লেল্যান্ড প্রভৃতি) প্রাথমিক ভাবে তাতে আগ্রহ দেখায়নি।
কিন্তু নিয়ম জারি হওয়ার পর থেকে ২০২৫ সাল নাগাদ দেশের সমস্ত ট্রাকের চালকের কেবিন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করতে হবে। সূত্রের খবর, এ জন্য ট্রাকপ্রতি ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে।