শিক্ষা তোমার জন্য নয়। তুমি অন্য কাজ খুঁজো। পড়ালেখা ছেড়ে দাও।” রোহিত রুইদাস কে প্রতিদিন এ ধরনের কথা শুনতে হতো। অথচ যারা তাকে অযোগ্য বলে মনে করতো, আজ তারাই তাঁর জন্য গর্ববোধ করে। তিনি যা করে দেখিয়েছেন তার জন্য পুরো গ্রামের মানুষের পাচ্ছেন আশীর্বাদ। রোহিত মহারাষ্টের বাসিন্দা ছিল। লোকেরা তাঁকে অক্ষম বলে মনে করতো। ‘তোমার কিছু হবে না। পড়াশুনা ছেড়ে অন্য কোন কাজের সন্ধান কর।’ এরম তাঁকে প্রতিদিন কুটুক্তির মুখোমুখি হত। উচ্চমাধ্যমিকে ফেল করে তিনি রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন আর সেখান থেকেই শুরু হয় তার ঘুরে দাঁড়ানোর কাহিনী।
মাধ্যমিকে তাঁর রেজাল্ট ভালো না হওয়ার জন্য তাঁকে শিক্ষকরা জিরো বলা শুরু করে। তিনি দ্বাদশ পরীক্ষায় গণিতে ফেল করায় লোকের এবং শিক্ষকদের প্রতি তাঁর সমন্ধে নেতিবাচক মনোভাব হয়ে ওঠে।আবার তিনি 12th পরীক্ষা দিয়ে পাস করে বিএসসিতে ভর্তি হন। এবার তিনি পড়াশুনার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। এরপর তিনি স্নাতক নিয়ে UPSC এর জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। তিনি এর পাশাপাশি পুনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি করেছেন। তাঁর বাবা চেয়েছিলেন সে বড় অফিসার হোক। এরপর তিনি পরীক্ষা দিতে শুরু করেন। ২০১৪ সালে তিনি প্রথমবার প্রিলিতে ব্যর্থ হন। আবার তিনি পরীক্ষা দেন। কিন্তু নেগেটিভ মার্কিংএর জন্য তাঁর আরো একটি নম্বর দরকার ছিল এবার ব্যর্থ হন।
রোহিতের বাবা একজন দিনমজুর ছিলেন। তাই আর্থিক সমস্যা তার জীবনে লেগেই থাকতো। সংসারের খরচের বোঝা বইতে তিনিও অনেক সময় বাবার সাথে দিনমজুরের কাজে গেছেন কিন্তু তিনি তার স্বপ্নকে ভুলে যাননি আর সেই জন্য তৃতীয়বার তিনি আবার প্রিলিতে বসেন। এবার তিনি সফল হয়েও ইন্টারভিউতে আটকে যান। এরপর চতুর্থতেও আটকে যান।
তবে এবার তিনি হতাশ হয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি রেঞ্জ ফরেস্ট অফিসে চাকরিও নেন। কিন্তু এসময় তাঁর বাবা তাঁকে সাহস জোগায়। তাঁকে আতঙ্ক না হয়ে আবার পড়া শুরু করতে বলেন। এবার তিনি সফল হন। তাঁর ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনে ২৬১ তম স্থান আসে।
এই ধরনের গল্প সাধারণ মানুষকে অনেক বেশি প্রেরণা যোগায় যে ব্যর্থতা মানুষের জীবনের অঙ্গ এবং সেই ব্যর্থতা কে সঙ্গে নিয়েই সাফল্যের দিকে দৌড়াতে হবে। আপনার ইচ্ছে শক্তি যদি প্রবল হয় তাহলে আপনিও সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যাবেন।