এই মুহূর্তে ১৪০ কোটি ভারতবাসী প্রতীক্ষা করে রয়েছে কবে চন্দ্রযান ৩ চাঁদ ছোঁবে। ইতিমধ্যেই গতি কমিয়ে একেবারে চাঁদের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে ভারতের এই মহাকাশযান। এবার কবে চাঁদের বুকে অবতরণ করতে চলেছে চন্দ্রযান ৩, সেই দিনক্ষণও ঘোষণা করল ISRO।ISRO-র শেষ ডি বুস্টিং সম্পন্ন হওয়ার পর চন্দ্রযান ৩ অবস্থান করছে ২৫ কিমি x ১৩৪ কিমি কক্ষপথে। এরপর শুধু সূর্য ওঠার প্রতীক্ষা। আগামী ২৩ অগাস্ট বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিট নাগাদ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করতে চলেছে চন্দ্রযান ৩। অর্থাৎ প্রত্যাশা মোতাবেকই কাজ করছে ল্যান্ডার বিক্রম।
ISRO-র তরফে জানানো হয়েছে, ল্যান্ডারটির অবস্থা সুস্থ সবল রয়েছে। সমস্ত কিছুই চলছে পরিকল্পনা মোতাবেক। চাঁদের কাছাকাছি পৌঁছনোর পর ল্যান্ডার বিক্রমের গতি একধাক্কায় কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপরেই অনুষ্ঠিত হয় শেষ ডি বুস্টিং।গত ১৪ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ভারতের চন্দ্রযান ৩। LVM রকেটের পিঠে চড়ে তা পাড়ি দিয়েছিল মহাকাশে। আপাতত তা এক মাসের বেশি সময় নিয়ে পৌঁছে গিয়েছে চাঁদের ঠিকানায়।
প্রথমেই জানিয়ে রাখবো ভারতের সাথে কম্পিটিশন করে রাশিয়া যে মহাকাশ যান পাঠিয়েছিল সেটি সফল হয়নি এবং চাঁদের মাটিতে সেদিন একটি সফট ল্যান্ডিং করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং তাদের পুরো মিশনটি নষ্ট হয়েছে। অর্থাৎ যে রাশিয়া ভারতের থেকে অনেক বছর আগে মহাকাশে যাওয়া নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিল এমনকি পৃথিবীর প্রথম ব্যক্তি হিসেবে মহাকাশে তারা ইউরি গ্যাগারিনকে পাঠিয়েছিল, সেই রাশিয়ার মহাকাশযান ব্যর্থ হচ্ছে চাঁদের ওই দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছতে অথচ ভারত প্রায় সফল হওয়ার সামনে দাঁড়িয়ে। এর আগে বিশ্বের তিনটি দেশ চিন, রাশিয়া এবং আমেরিকা চাঁদ জয় করতে পেরেছে। কিন্তু এই তিন দেশই দক্ষিণ মেরু স্পর্শ করতে পারেনি।
সেক্ষেত্রে ভারত যদি অবতরণ করতে পারে সেক্ষেত্রে তা দেশবাসীর জন্য বড় সাফল্য।দ্বিতীয়ত, অবতরণের পর ল্যান্ডার বিক্রম থেকে বেরিয়ে আসবে রোভার প্রজ্ঞান এবং তা চাঁদে পরীক্ষা চালাবে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে একাধিক বড় গর্ত রয়েছে। সেখানে কোনওভাবে দামি কোনও খনিজ পদার্থ লুকিয়ে রাখা হয়েছে কিনা সেই বিষয়ে চালানো হবে অনুসন্ধান। একইসঙ্গে চাঁদ থেকে ছবি তুলে পাঠাতে সক্ষম হবে চন্দ্রযান ৩।তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ISRO-র চন্দ্রযানের সফল অবতরণের জন্য প্রয়োজন সূর্যের আলোর। সূর্যের আলো পাওয়ার পরেই সফট ল্যান্ড করবে ল্যান্ডার বিক্রম।
তা চাঁদে ১৪ দিন পর্যন্ত পরীক্ষা চালাতে সক্ষম। এর আগে প্রথম ২০০৯ সালে চন্দ্রযান ১ মিশন করে ISRO। কিন্তু, তা ব্যর্থ হয়েছিল। এরপর ২০১৯ সালে চন্দ্রযান ২ মিশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু, চাঁদের খুব কাছাকাছি গিয়েও সেই মিশনও সফল হয়নি। এখন দেশবাসীর চোখ আটকে ISRO-র মুন মিশন ৩-এ।