গরীব মা দিনমজুরি করে ছেলে মানুষ করে,কষ্টের দাম দিল ছেলে,যা করে দেখাল!স্যালুট নেটিজেনদের

কোন মানুষ যদি জীবনে কিছু একটা করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তার পিছনে প্রাণপণ চেষ্টা করে তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই সাফল্য আসে। কারণ কথাতেই আছে যে চেষ্টা করে তার কখনো পরাজয় হয় না। হয়তো সেখান থেকে এসে জয় লাভ করে অথবা সেখান থেকে ভালো কিছু শিখে আসে যা পরবর্তীতে তাকে জয়লাভ করতে সাহায্য করে।।কথায় আছে যে ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। আর এই ইচ্ছা শক্তির সাথে যদি শিক্ষার শক্তিও যুক্ত হয়ে যায় তাহলে কোনো মানুষকে সফলতা অর্জন করতে কেউ আটকাতে পারে না। আজ এমন একজন ব্যক্তির কথা বলতে চলেছি যিনি অত্যন্ত দরিদ্র অবস্থাতে নিজের জীবন শুরু করলেও আজকে এমন জায়গায় পৌঁছেছেন যেখানে পৌঁছানো অনেকের স্বপ্ন।

ছোটবেলা কেটেছে চরম দারিদ্রতার মধ্যে

এই ব্যক্তি হলেন শরথ বাবু (sarath Babu)। কিন্তু কিভাবে তিনি একজন দরিদ্র মানুষ থেকে কোটিপতিতে পরিণত হলেন সেটা জানলে অবাক হতে হয়। চেন্নাইয়ের মাদিপাক্কামের এক দরিদ্র দলিত পরিবারে জন্ম নেওয়া শরথ বাবু (sarath Babu) ছোটবেলা থেকেই এক বস্তিতে থেকে বড় হয়েছেন। তার পরিবার বরাবর আর্থিকভাবে খুবই দুর্বল ছিল। শরথ বাবুরা দুই বোন ও দুইভাই ছিলেন। পুরো পরিবারকে লালন-পালন করার দায়িত্ব ছিল শরথ বাবুর মায়ের ওপর। শরথের মা একটি স্কুলে মিড-ডে মিল মেকার হিসাবে কাজ করতেন। মিড-ডে মিলের চাকরি থেকে প্রতি মাসে প্রাপ্ত ৩০ টাকা বেতন দ্বারা তিনি কোনোভাবে তার সংসার চালাতেন ও বাচ্চাদের ভরণপোষণ করতেন। তবে যেহেতু শরথ বাবুর পরিবারে সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় মাত্র ৩০ হাজার টাকায় সংসার চালানো খুব কঠিন হয়ে পরতো শরথ বাবুর মায়ের জন্য।

```

শিক্ষার ভিত্তিতে এগিয়ে গেছিলেন শরথ

শরথকে শুধুমাত্র শিক্ষিত হতে চাইতেন না। তিনি একটি ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে ভালো ডিগ্রি অর্জন করতে চাইতেন। যাতে তিনি ভালো চাকরি করতে পারেন এবং নিজের পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারেন। এমতাবস্থায় তার এক বন্ধু তাকে পিলানিতে অবস্থিত বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স, বিআইটিএস, পিলানি সম্পর্কে জানায়। এই ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হওয়া মানে ভালো চাকরি পাওয়া অবধারিত। এরপর দিনরাত এক করে পরিশ্রম করার পর শরথ এই ইনস্টিটিউতে এডমিশন পেয়েছিলেন। কিন্তু এই ইনস্টিটিউটের ফিস এতটাই বেশি ছিল যে শরথের পক্ষে সেই ফিস দেওয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু শরথের দিদি নিজের গয়না বেচে শরথের কলেজের ফিস জোগাড় করেছিল।

বিআইটিএস পিলানি থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর শরথ চেন্নাইয়ের পোলারিস সফটওয়্যার ল্যাবসে চাকরি পেয়েছিলেন। এরপর তিনি আইআইএম-এ ভর্তি হতে চাইতেন ম্যানেজমেন্টের ডিগ্রি অর্জন করার জন্য। এমন পরিস্থিতিতে কাজের সাথে সাথে তিনি আইআইএম-এ ভর্তির জন্য ক্যাট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন। দুবার ব্যর্থ হওয়ার পর শেষমেষ তৃতীয় প্রচেষ্টায় তিনি ক্যাট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।

```

শুরু করলেন নিজের ব্যবসা

আইআইএম আহমেদাবাদে ভর্তি হওয়ার পর সেখানে পড়াশোনা করার সময় শরথ অনেক চাকরির অফার পেয়েছিলেন। যার স্যালারি প্যাকেজ ছিল লক্ষাধিক। কিন্তু শরথ আর চাকরি করতে চাননি। তিনি জীবনে বড় ও আলাদা কিছু করতে চেয়েছিলেন। এরপর শরথ বাবু খাদ্য সরবরাহের ব্যবসায় (business) নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অনেক কষ্টে অর্থের ব্যবস্থা করার পর, শরথ ২০০৬ সালে এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করে তিনি নিজের ব্যবসাটিকে (business) শুরু করে ছিলেন।

কোম্পানির নাম রেখেছিলেন ফুড কিং ক্যাটারিং সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড। প্রথমদিকে শরথের এই কোম্পানিটি কফি, চা এবং জলখাবার সরবরাহকারী কোম্পানিগুলিতে কাজ করতে শুরু করেছিলেন এবং ধীরে ধীরে তারা নতুন ও বড় কোম্পানির অর্ডারও পাচ্ছিলেন। এরপর শরথ ফুড কিং ক্যাটারিং নামে ভারতের অনেক জায়গায় রেস্তোরাঁও খুলতে শুরু করেন এবং প্রচুর পরিমানে সফলতা অর্জন করেন। আজ তিনি প্রতি মাসে প্রায় কোটি কোটি টাকা আয় করছেন।