ফিল্ডাররা থাকবেন খেলার মাঠে। তা না, বল খুঁজতে তাঁদের ঢুঁ মারতে হলো মাঠের বাইরে ঝোপ-ঝাড়ে। কী? ঝড় বললে কম বলা হয়। রানের টর্নেডো, টাইফুন, সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস—এমন আরও যা যা শব্দ আছে তা আজ আমস্টেলভিনে ইংল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস প্রথম ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের ইনিংসের জন্য ব্যবহার করা যায়। ম্যাচটা না দেখে থাকলে অবশ্যই পরের প্রশ্ন হবে—কেন? খুলেই বলা যাক। আইসিসির এই সহযোগী দেশটির বিপক্ষে পূর্ণ শক্তির দল পাঠায়নি ইংল্যান্ড। তাতেই কি না, হয়ে গেল ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড!
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আজ সিরিজের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ৪৯৮ রান তুলেছে ইংল্যান্ড। ওয়ানডেতে আগে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডটি ইংল্যান্ডের দখলেই ছিল। ২০১৮ সালে নটিংহামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬ উইকেটে ৪৮১ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। সেই রেকর্ড আজ নতুন করে লিখল এউইন মরগানের দল। ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের শীর্ষ চারটি রেকর্ডই ইংল্যান্ডের। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটেও আজ সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি নতুন করে লিখিয়েছে ইংল্যান্ড।
২০১৫ বিশ্বকাপের পরই ওয়ানডে খেলার ধরন পাল্টেছে ইংল্যান্ড। সে ধারাবাহিকতায় আজ নতুন ইতিহাস লিখলেন জস বাটলার-ডেভিড মালানরা। এক ইনিংসেই তিন-তিনটি শতক! বাটলার, মালান ও চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নামা ওপেনার ফিল সল্ট শতক তুলে নেন। বাটলার ছিলেন সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক। ১৪ ছক্কা ও ৭ চারে ৭০ বলে ১৬২ রানের ইনিংস খেলেন বাটলার। ৩ ছক্কা ও ১৪ চারে ৯৩ বলে ১২২ করেন ফিল সল্ট। ৩ ছক্কা ও ৯ চারে ১০৯ বলে ১২৫ রান করেন মালান। শেষ দিকে লিয়াম লিভিংস্টোন আরেকটু হলে ওয়ানডেতে দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড ভেঙে ফেলতেন।
৬ ছক্কাও ৬ চারে ২২ বলে ৬৬ রান করার পথে ১৭ বলে অর্ধশতক তুলে নেন লিভিংস্টোন। ওয়ানডেতে দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ডটি এবি ডি ভিলিয়ার্সের, ১৬ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেটি ছুঁতে না পারলেও ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড গড়ে ফেলেন লিভিংস্টোন। প্রোটিয়া কিংবদন্তির আরেকটু রেকর্ডও একটুর জন্য বেঁচে গেছে। ওয়ানডেতে দ্রুততম ১৫০ রানের রেকর্ডও ডি ভিলিয়ার্সের। ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬৪ বলে রেকর্ডটি গড়েন তিনি। বাটলার ৬৫ বলে ১৫০ রানের মাইলফলক ছুঁয়ে একটুর জন্য তাঁকে পেছনে ফেলতে পারেননি।
৪৮ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ৪৭০। তখন মনে হচ্ছিল ওয়ানডেতে প্রথমবারের মতো ৫০০ রানও দেখা হয়ে যাবে । দুর্ভাগ্য, ৪৯তম ওভারে ৭ রান এবং ৫০তম ওভারে ২১ রান তোলায় পাঁচ শ দেখা যায়নি। অথচ, ইংল্যান্ডের শুরুটা ভালো হয়নি। ১.৩ ওভারে ওপেনার জেসন রয়কে হারিয়ে বিপদে পড়েছিল সফরকারী দল। মজার বিষয়, রয়কে আউট করেন তাঁরই ‘কাজিন’ শেন স্ন্যাটার। দ্বিতীয় উইকেটে সল্ট-মালান মিলে ১৭০ বলে ২২২ রানের জুটি গড়েন। সল্ট আউট হওয়ার পর তৃতীয় উইকেটে বাটলার-মালান মিলে ৯০ বলে গড়েছেন ১৮৪ রানের জুটি। পঞ্চম উইকেটে বাটলার-লিভিংস্টোনের জুটির রান তোলার গতি ছিল আরও দ্রুত—৩২ বলে অবিচ্ছিন্ন ৯১*।