দৈনন্দিন জীবনে আমরা এই ধরনের অনেক মানুষের গল্প শুনতে পায় যাদের জীবনের কষ্টের কাহিনী আমাদেরকে ভীষণভাবে ইন্সপায়ার করে যে তারা কোন জায়গা থেকে কোন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে উঠে এসে আজকে কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছেন শুধুমাত্র কঠোর পরিশ্রম করে। এরকমই একজন ব্যক্তির কথা আজকে আপনাদের জানাবো, ওই ব্যক্তির নাম হিমাংশু গুপ্ত। তিনি প্রতিদিন ৭০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতেন। বাবাকে সাহায্য করার জন্য চায়ের দোকানে অনেক সময় কাজও করতেন।
তিনি স্কুল ড্রপআউট করেছিলেন একসময়। তবে তিনি কখনোই হাল ছাড়েননি। জীবনে বড় কিছু একটা করতে চেয়েছিলেন তিনি।তবে প্রতিমুহূর্তে তাঁকে পরিশ্রম করে যেতে হয়েছে। অনেক বাধা-বিপত্তি বা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে লড়াই করে যেতে হয়েছে তাঁকে। তবে তাঁর উদ্যোগ এবং আবেগকে কখনোই থামানো যায়নি। তাঁর বাবা ছিলেন পেশায় দিনমজুর। তিনি রোজগারের জন্য চায়ের দোকানেও বসতেন। তবে তাঁর বাবা ঠিক করেছিলেন, তিনি তাঁর ছেলেমেয়েদের স্কুল পাঠাবেন এবং মানুষের মত মানুষ করবেন।কঠোর পরিশ্রম করে UPSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং একজন IAS অফিসার হন। তবে তার লড়াইয়ের গল্প শুনলে আপনারও চোখে জল আসবে।
বন্ধুদের কাছে ছিলেন ঠাট্টার পাত্র
তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার আগে এবং আসার আগে আমার বাবার সাথে কাজ করতাম। স্কুলটি ৩৫ কিলোমিটার দূরে ছিল। সুতরাং আমাকে ৭০ কিলোমিটার অতিক্রম করতে হতো। আমি আমার বন্ধুদের সাথে ভেনে যাতায়াত করতাম। যখন আমার বন্ধুরা আমার বাবার চায়ের স্টলে আসত। তখন আমি লুকিয়ে থাকতাম। কারণ কেউ একবার আমাকে দেখে নিলেই মজা করা শুরু করবে। আমাকে চাওয়ালি বলতো আমার বন্ধুরা। তবে আমি সেসব দিকে মনোযোগ না দিয়ে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতাম। যখনি সময় পেতাম বাবাকে সাহায্য করতাম। প্রতিদিন বাবা ও আমি মিলে ৪০০ টাকা করে রোজার করতাম। তবে আমার স্বপ্ন ছিল অনেক বড়।’
আমি সবসময় ভালো জীবন গড়ার জন্য স্বপ্ন দেখতাম। বাবা সবসময় বলতেন, যদি স্বপ্ন সত্যি করতে চাও। তাহলে পড়াশোনা করো। তখন আমি ইংলিশ অত বুঝতাম না। তাই ইংরেজি মুভি ডিভিডি কিনে এনে দেখতাম শেখার জন্য। আমি আমার বাবার পুরনো ফোনটি 2G সংযোগে ব্যবহার করতাম। আমি ভালো স্কোর করে কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম।
আমার বাবা-মার কলেজ সম্পর্কে কোন ধারনা না থাকলেও তারা বিশ্বাস করেছিল, আমার উপরে। তবে কলেজে ভর্তি হয়েও এত ভালো ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আমার যেন পরিবেশটা অপরিচিত লাগতো। কিন্তু আমার একটা জিনিস ছিল, সেটা সবার থেকে আলাদা। সেটা হলো আমার শেখার ক্ষুধা।’