শোভিত সিংহ। শৈশব থেকেই তাঁর স্বপ্ন ছিল অন্য রকম। কেরিয়ার নিয়ে চিন্তিত ছিলেন না শোভিত। তাঁর ইচ্ছা ছিল পরিবারের থেকে আলাদা হয়ে সন্ন্যাস গ্রহণ করে জীবন কাটানোর। কিন্তু অদৃষ্টের লিখন ছিল অন্য রকম। বর্তমানে কোটি কোটি টাকা সম্পত্তির মালিক শোভিত।উত্তরপ্রদেশের কানপুরে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম শোভিতের। ছোট থেকে পড়াশোনার প্রতি তেমন আগ্রহ ছিল না তাঁর। জীবনের আসল অর্থ কী, তার সন্ধানেই শোভিত থাকতেন সর্বক্ষণ।শোভিতের বিশ্বাস ছিল, সন্ন্যাস গ্রহণ করে সারা জীবন অতিবাহিত করলেই তিনি তাঁর জীবনের গূঢ়ার্থ বুঝতে পারবেন। তাই ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রমে চলে যেতে চাইতেন তিনি।
কিন্তু পরিবারের সকলে তাঁর এই চিন্তাধারাকে মান্যতা দিত না।আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করেন শোভিত। তার পর এমবিএ নিয়ে পাশ করেন তিনি। কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ধর্মের খুঁটিনাটি বিষয়ে পড়তে শুরু করেন।বৈদিক দর্শন ছাড়াও খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্ম সম্পর্কেও জ্ঞান আহরণ করেন শোভিত। তবে, কলেজের পড়াশোনার পর রাজধানীর একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হন তিনি।কিন্তু চাকরিতে বেশি দিন মন টেকাতে পারেননি শোভিত। ২৬ বছর বয়সে চাকরি ছেড়ে হৃষীকেশে একটি আশ্রমে চলে যান তিনি।
সেখানে গিয়ে মহেশ যোগীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।হৃষীকেশ আশ্রমেই প্রায় দেড় বছর সন্ন্যাসজীবন কাটিয়েছেন শোভিত। তার পর পরিবারের চাপে আবার বাড়ি ফিরে আসতে হয় তাঁকে। বিয়ে করে শোভিতকে সংসারে মন দিতে বলেন তাঁর পরিবারের গুরুজনেরা।গুজরাতের বরোদা এলাকার একটি সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারের তরুণীর সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় শোভিতের। পরিবারের চাপে বিয়ে করার পর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন তিনি।শোভিত প্রথমে তাঁর শ্যালকদের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু ব্যবসায় লাভ করতে পারছিলেন না তিনি।
আমেরিকা যখন চিন থেকে আসা জিনিসের উপর আমদানি শুল্কের হার বাড়িয়ে দেয় তখন শোভিত ব্যবসার নতুন পথ বার করেন।শোভিত সিদ্ধান্ত নেন, চিন থেকে আসা যে পণ্যের উপর শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, সেগুলির বিকল্প দ্রব্য উৎপাদন করবেন তিনি। স্কেচ পেন, চক বোর্ড এবং পেনসিলের বাক্স উৎপাদন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বেশ কিছু পণ্য বিদেশে রফতানিরও সিদ্ধান্ত নেন।
তার জীবনের এই গল্প অসংখ্য মানুষকে জীবনের লড়াই করতে এবং এগিয়ে যেতে অনেক বেশি সাহস এবং ইনস্পিরেশন যুগিয়ে আসছে।