নিজে গরীব,দরিদ্র মানুষদের জন্য কাজ করার ইচ্ছা থেকে এমন মেশিন বানালেন!স্যালুট নেটিজেনদের

দৈনন্দিন জীবনে আমরা এই ধরনের অনেক মানুষের কাহিনী শুনে থাকি যারা ভীষণ গরিব একটি পরিবার থেকে উঠে গিয়ে এমন কাজ করে দেখিয়েছেন যে সারাদেশের মানুষ তাদের জন্য গর্বিত। খেলাধুলার জগতে এরকমের একজন মানুষ যেমন মহেন্দ্র সিং ধোনি যিনি গরিব পরিবার থেকে উঠে এসেও সারা বিশ্বে এত বড় একজন ক্রিকেটারের নাম হিসেবে উঠে এসেছেন। তেমনি বাস্তব জীবনেও এই ধরনের অনেক মানুষ রয়েছেন যারা নিজেদের ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে উঠে বড় জায়গাতে পৌঁছেছেন পাশাপাশি সমাজের জন্য এমন কাজ করে গেছেন যা একদমই অকল্পনীয়।

বাতাসে পাঁচ ভাগের একভাগই থাকে অক্সিজেন। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সেই অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারেন না বা পারলেও সেটি প্রয়োজনের চেয়ে কম হয়ে যায়। তখন তাকে দিতে হয় মেডিকেল অক্সিজেন। আর এই অক্সিজেন তৈরি হয় কারখানায়।কিন্তু প্রাকৃতিক বাতাসে যদি অক্সিজেনের ঘনত্ব বাড়িয়ে নেয়া যেত তাহলে কোন মেশিনের প্রয়োজন ছাড়াই শ্বাসপ্রশ্বাসের কাজটা সহজ হতো। এটা যেহেতু সম্ভব নয়, সে কারণে মেশিনের সাহায্যে অসাধ্য কাজটি সহজতর করা হয়েছে। কিন্তু এই ব্যক্তি যে মেশিন আবিষ্কার করলেন…

```

দেশীয় প্রযুক্তিতে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন তৈরি করেছেন আরামবাগের যন্ত্র প্রকৌশলী বিপ্লব। করোনাকালে তার তৈরি এই যন্ত্র অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে আলোর পথ দেখিয়েছে, তবে করোনা পরবর্তী সময়ে বর্তমানেও এই মেশিনের গুণাবলী অনেক। এই যন্ত্রে মাত্র ৩ টাকার বিদ্যুতে প্রতি ঘণ্টায় উৎপাদন করা যাবে ৬০০ লিটার বিশুদ্ধ অক্সিজেন। প্রতি লিটারে যার মূল্য দাঁড়ায় ০.০০৫ পয়সা।এই মেশিন ব্যবহার করে একসঙ্গে পাঁচজন করোনা রোগী পরিপূর্ণভাবে অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারবে। প্রয়োজনে এই যন্ত্রের সক্ষমতা আরও বাড়ানোও সম্ভব। বিপ্লবের তৈরি এই অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর মেশিন করোনা রোগীদের শ্বাসজনিত সমস্যা দূর করবে। একইসঙ্গে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে একাধিক রোগীর জন্য ব্যবহার করে জীবন বাঁচাতে সহায়তা করবে।

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক এই শিক্ষার্থী এর আগে ইনটেলিজেন্ট ডিসি ভেন্টিলেশন সিস্টেম এবং বন্যা সতর্কীকরণ যন্ত্র ও বেবি ইউরিন অ্যালার্ম বেড উদ্ভাবন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। আর এবার তার উদ্ভাবন করা অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন সরকারের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) বিভাগে প্রদর্শনীর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এখন এই যন্ত্রটি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির অপেক্ষায় রয়েছে।এই মেশিনটি সম্পূর্ণভাবে দেশীয় উপাদান দিয়ে তৈরি। খরচ কম, সহজলভ্য এবং পোর্টেবল। প্রয়োজনে বাসা-বাড়ি, অফিস, হাসপাতাল, ক্লিনিক যেকোনো স্থানে এই মেশিনটি ব্যবহার করা যাবে। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো বাতাস থেকে তার এই মেশিনটি ৯৫ থেকে ৯৮ ভাগ বিশুদ্ধ অক্সিজেন উৎপাদন করতে সক্ষম।

```

তার এই মেশিন তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে মৃদু শব্দের কমপ্রেসর, কপার টিউব, ডাস্ট ফ্রি এয়ার ফিল্টার, হাই প্রেশার কন্ট্রোলিং ডিভাইস এবং ইন্টারনেট কানেক্টিভটি দিয়ে দূর থেকে মেশিনটি পরিচালনা করার জন্য আইওটি বেইজ মনিটর (ইন্টারনেট অব থিংকস)। ২৮ থেকে ৩০ কেজি ওজনের এই মেশিনটি ট্রলি সিস্টেমের মাধ্যমে সহজেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত করা যায় এবং একসঙ্গে পাঁচজন করোনা আক্রান্ত রোগীকে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে। প্রয়োজন অনুসারে এই যন্ত্রটি একজন থেকে সর্বোচ্চ ১০০ জনের সেবা দেয়ার মতো করে তৈরি করা সম্ভব।