ভাগ্য খুবই খারাপ একটা জিনিস, ভাগ্যকে খারাপ বলার একটাই কারণ এটা সবসময় পাল্টে যায়। আজকে যে গরিব তার ভাগ্য পাল্টে সে ধনী হতে পারে আবার অনেক ধনী ব্যক্তি তার সর্বস্ব হারিয়ে কালকে রাস্তার বিক্রি পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে তাই ভাগ্য খুবই খারাপ একটা জিনিস।। কিন্তু এই ভাগ্যের সাথে যদি পরিশ্রম মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় তাহলে ভাগ্য সেই দিকেই পাল্টি খাবে, যেদিকে আপনি চাইবেন। আর এরকমটাই করে দেখালেন দরিদ্র গরিব এক যুবক, শুভম গুপ্ত নামের এই যুবক যা করে দেখালেন স্যালুট জানাচ্ছেন নেটিজেনরা।
UPSC-এর সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষা শুধুমাত্র দেশেই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এবং কঠিন পরীক্ষাগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। এই পরীক্ষার 3টি ধাপ ক্লিয়ার করা সবার সামর্থ্যের মধ্যে নেই। এ কারণেই কেবল নির্বাচিত ব্যক্তিরাই পরীক্ষায় সাফল্য পান। মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা নিরীশ রাজপুতের (আইএএস নিরীশ রাজপুত) গল্পও একই রকম। আসুন, জেনে নেওয়া যাক কীভাবে তিনি এই পরীক্ষায় পার পেয়েছিলেন।
খুব দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিরীশের
নিরীশ রাজপুত (আইএএস নিরিশ রাজপুত) মূলত মধ্যপ্রদেশের। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে আসা, নিরিশের বাবা বীরেন্দ্র রাজপুত পেশায় একজন দর্জি এবং তার বড় ভাই দুইজনই শিক্ষক। নীরীশকে আইএএস বানাতে, ভাই এবং বাবা উভয়েই তাদের সমস্ত উপার্জন ব্যয় করেছিলেন। নিরিশ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, প্রস্তুতি নেওয়ার আগে তিনি এ বিষয়ে বিশেষ কিছু জানতেন না। তবে আইএএস হওয়ার মাধ্যমে জীবন যে বদলে যায় তা নিশ্চিতভাবেই জানা ছিল।
বন্ধুর বিশ্বাসঘাতকতা
নিরিশের বাড়ির অবস্থা হয়তো জরাজীর্ণ, কিন্তু সে B.Sc এবং M.Sc দুটোতেই টপ করেছে। এর পরে তার নতুন কোচিংয়ে তার এক বন্ধু তাকে ইউপিএসসির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীদের শেখানোর সুযোগ দেয়। বিনিময়ে সেই বন্ধু নিরীশকে পড়াশোনার সামগ্রী দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। 2 বছরের কঠোর পরিশ্রমের পর ইনস্টিটিউটটি উন্নতির পথে এগোলেও নিরীশের জীবনে ভূমিকম্প হয়। বন্ধু নিরীশকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষার মাধ্যমও।
খবরের কাগজ বিক্রি শুরু করে
নিরিশের কাছে যখন ফি দেওয়ার মতো টাকা ছিল না, তখন তিনি পত্রিকাটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। বাড়ি বাড়ি খবরের কাগজ বিলি করে ফি বাবদ টাকা জোগাড় করলেও হাল ছাড়েননি।
দুঃখ পেয়ে দিল্লি চলে যান
বন্ধুটি প্রতারণা করলে এই ঘটনায় গভীরভাবে আহত হন নিরীশ। এরপর দুই বছর কিছুই করতে পারেননি। তিনি এই প্রতারণা থেকে শিক্ষা নিয়ে দিল্লিতে চলে যান। সেখানে তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এমন এক সহকর্মীর কাছ থেকে নোট ধার নেন।
আসলে কোচিংয়ে যোগ দেওয়ার টাকাও ছিল না নিরীশের। তাই তিনি দিল্লিতে থেকে যান এবং পড়াশোনার মধ্যে পার্টটাইম চাকরি করতে শুরু করেন এবং কোনও কোচিং ছাড়াই UPSC পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। প্রস্তুতির সময় তিনি প্রতিদিন প্রায় ১৮ ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন। এই কারণে তিনি UPSC পরীক্ষায় 370 তম স্থান পেয়েছেন। যদিও এর আগে নীরীশও তিনবার ব্যর্থ হয়েছিলেন।