অভাবের সংসার,সবজি বেচে বাবা! মাধ্যমিকে তাক লাগালো গরীব ঘরের ছেলে তুষার!

তুফানগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রাম বক্সিরহাট হাইস্কুলের ছাত্র তুষার দেবনাথ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে নবম স্থান অধিকার করেছে। গরীব সব্জি বিক্রেতার পরিবারের ছেলে তুষার যে বিশাল নাম্বার পেয়েছে তাতে স্বাভাবিক ভাবেই এলাকায় খুশির হাওয়া। বাংলা ও ইতিহাসে ৯৩ করে, ইংরেজি ও জীবন বিজ্ঞানে ৯৯ করে, অঙ্ক, ভৌত বিজ্ঞান ও ভূগোলে ১০০ করে নম্বর পেয়েছে সে। তুষারের বাবা তপন দেবনাথ সব্জি ব্যবসায়ী। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিনি সংসার চালাচ্ছেন। গরিবির সাথে লড়াই করেও মোট কত নাম্বার পেয়েছে সে, জানলে অবাক হতে হয়।

হাজার কষ্ট করেও ছেলের পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোনও খামতি রাখেননি। পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষকরাও তাকে সহায়তা করেছে। তুষারের মা অঞ্জনা দেবনাথ গৃহবধূ। ওর ভাই তরুণ নবম শ্রেণির ছাত্র। তুষারের নজরকাড়া সাফল্যে বক্সিরহাটের সুভাষপল্লির নিচুতলায় এখন খুশির হাওয়া। তুষার বলে, পরীক্ষার আগে দিনে ছ’ঘণ্টা করে পড়তাম। পাঁচজন গৃহশিক্ষক ছিলেন। আগামী দিনে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে আমার। বক্সিরহাট হাইস্কুলেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হব। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলতে ভালো লাগে।

```

তুষারের বাবা তপনবাবু বলেন, বক্সিরহাট বাজারেই সব্জির ব্যবসা করি। আগে ব্যবসা ভালো ছিল। তবে এখন আর্থিক সমস্যার কারণে ব্যবসা ছোট হয়ে গিয়েছে। দুই ছেলে আমার। প্রথম থেকেই আমাদের লক্ষ্য ডাল-ভাত খেয়ে হলেও দুই ছেলেকে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছে দেব। ছেলের গৃহশিক্ষকরাও আমার আর্থিক সমস্যার কথা জানেন। তাই তাঁরাও যথেষ্ট সহায়তা করেছেন। ছেলে চিকিৎসক হতে চায়। স্কুলের শিক্ষক, পাড়াপ্রতিবেশী বা সরকারের সহায়তা পেলে ওর লক্ষ্যে পৌঁছনোর পথ মসৃণ হবে।

বক্সিরহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুরজিৎ পন্ডিত বলেন, তুষার বরাবর ভাল ছাত্র। সেই কারণে আমরা ওর রেজাল্টের দিকে নজর রেখেছিলাম। ওর এই সাফল্যে আমরা গর্বিত। কেচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ছেলেটি খুবই গরিব পরিবারের। ও ডাক্তার হতে চায়। দারিদ্রতা যাতে ওর পড়াশোনার ক্ষেত্রে অন্তরায় না হয়, সেই বিষয়টি আমরা অবশ্যই দেখব।

```

সব মিলিয়ে সারা রাজ্যজুড়ে এরকম অসংখ্য নিদর্শন আমরা দেখতে পাচ্ছি যারা দরিদ্রতার সাথে লড়াই করেও নিজেদের পড়াশুনা এবং ভবিষ্যতের দিকে এক অদম্য জেদ নিয়ে এগিয়ে চলেছে যার মধ্যে অন্যতম সবজি বিক্রেতার ছেলে তুষার।