চমকপ্রদ আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের!শরীরে বিশেষ জায়গায় ‘দ্বিতীয় মস্তিষ্ক’!ব্যবহার করলেই বদলে যাবে জীবন!

হাঁটুতে মস্তিষ্ক’। প্রচলিত এই প্রবাদবাক্য হামেশাই ব্যবহার করে থাকি আমরা। আর হাঁটুতে অবস্থিত এই দ্বিতীয় মস্তিষ্কের কথা উল্লেখ করা হয় নির্বুদ্ধি বোঝাতে। কিন্তু আদৌ কি আমাদের দেহে দ্বিতীয় কোনো মস্তিষ্ক রয়েছে? এমন প্রশ্ন শুনে, খানিক ঘাবড়ে গেলেন নিশ্চয়ই? সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে তেমন কথাই। মানুষের দেহেই লুকিয়ে রয়েছে দ্বিতীয় মস্তিষ্ক। তবে সেই মস্তিষ্ক হাঁটুতে নয়, রয়েছে অন্য একটি জায়গায়।

বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন হাঁটুতে নয়, বরং অন্ত্রে (Gut)।হ্যাঁ, এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনলেন মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের গবেষণায় উঠে এল, মানুষের অন্ত্রে অবস্থিত এন্টারিক স্নায়ুতন্ত্র (Enteric Nervous System) অনেকটা স্বতন্ত্র মস্তিষ্কের মতোই কাজ করে। কিন্তু মানুষের গোটা শরীরেই জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে স্নায়ুকোষ। তবে অন্ত্রের এই স্নায়ুতন্ত্রের বিশেষত্ব কী?

গবেষকরা জানাচ্ছেন, মানুষের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে অন্ত্রকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হলেও স্বতন্ত্রভাবে কাজ চালিয়ে যায় সেটি। আর তা সম্ভব হয়, এন্টারিক স্নায়ুতন্ত্রে অবস্থিত নিউরোন এবং গ্লিয়া নামের দুটি স্নায়ুকোষের কারণে। নিউরোন এবং গ্লিয়ার জালিকা বিস্তৃত রয়েছে সমগ্র অন্ত্রের আস্তরণের ওপর। যেগুলি বিশেষভাবে সক্রিয়। গবেষকরা জানাচ্ছেন, গ্লিয়ার নিউরোনাল সার্কিট মূলত সংকেত পরিচালনে সাহায্য করে। অন্যদিকে নিউরোনের অস্তিত্ব কাজের নির্দেশনা করে অন্ত্রের কলাতন্ত্রকে।

চমকে ওঠার মতো বিষয় হল, মানুষের অন্ত্রে নিউরোন ও গ্লিয়ার পরিমাণ বিড়ালের মস্তিষ্কে অবস্থিত মোট স্নায়ুকোষের সংখ্যার থেকেও বেশি। এই সবদিক বিবেচনা করেই অন্ত্রের স্নায়বিক গঠনকে দ্বিতীয় মস্তিষ্ক হিসাবেই বর্ণনা করছেন গবেষকরা। তবে শুধু মূল মস্তিষ্কের অনুপস্থিতিতেই নয়, তা ছাড়াও অন্ত্রের কাজের ওপর সুনির্দিষ্ট প্রভাব রয়েছে এন্টারিক স্নায়ুতন্ত্রের।

আর তার জেরেই অন্ত্রের বিভিন্ন রোগ এবং খিটখিটে মেজাজও দেখা দেয় মানুষের মধ্যে। সম্প্রতি এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রসিডিংস অফ ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা’ জার্নালে। আগামীদিনে অন্ত্রের রোগ নির্ণয় এবং বাওয়েল সিনড্রোমের চিকিৎসায় এই গবেষণা দিশা দেখাবে বলেই আশাবাদী গবেষকরা…