“গরিব হওয়া কোন অপরাধ নয়” এই কথাটা আমরা সমাজের অনেক জায়গায় শুনতে পাই। কিন্তু এই কথাটা কতটা বাস্তব ? সত্যিই কি গরিব হওয়া কোন অপরাধ নয়? দুবেলা দুমুঠো অন্য জোগাড় করতে যখন মানুষ হিমশিম খায় তখন “গরিব হওয়া কোন অপরাধ নয়” এই কথাটা কি আদৌ কাজে দেয়? বৃদ্ধ বাবা মায়ের চিকিৎসার জন্য যখন অর্থ থাকে না তারা বিনা চিকিৎসায় বিনা অপারেশনে তাদের মৃত্যু হয় তখন কি এই কথাটা খাটে “গরীব হওয়ার কোন অপরাধ নয়”! আর সেরকমই একজন ক্লাস ফোরে পড়া শিশুর কথা সামনে এসেছে, যে গরিব হয়ে জন্ম নিয়েছে, অর্থাৎ লড়াই তাকে করতে হবে তাই নেমে পড়েছে লড়াইয়ের ময়দানে।
বলা হয়ে থাকে দারিদ্র্য এমন একটা জিনিস যা খুব অল্প বয়সেই অনেক কিছু শেখায়। আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে লেখাপড়া ও খেলার বয়সে অনেক শিশু হারিয়ে যায়দায়িত্বআমরা এটি বুঝতে শুরু করি এবং এটি সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করি।একই রকম গল্প সত্যম কুমারের , যিনি পেন্সিল বিক্রি করেন তার পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের খরচ মেটাতে। সত্যম, বিহারের রাজধানী পাটনার বাসিন্দা, পাটনার এনআইটি ঘাটের কাছে পেন্সিল বিক্রি করেন ।দ্য ইন্ডিয়ান স্টোরিজ অনুসারে, সত্যম মাত্র চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র এবং এত অল্প বয়সে তার দায়িত্ব বোঝার চেষ্টা করছে।
সত্যম বলেছিলেন যে তার বাবা রিকশা চালান এবং দিনে ৩০০-৪০০ টাকা আয় করেন। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে টাকার দাম কমেছে, সামান্য টাকার মধ্যেই পরিবার চালানো ছেলে মেয়ের পড়াশোনা বৃদ্ধ বাবা-মায়ের চিকিৎসা ওষুধ, এই সামান্য টাকা দিয়ে সবকিছু ঠিকভাবে করাটা একটা চ্যালেঞ্জ। চালানো বড় চ্যালেঞ্জ।বলা হয়ে থাকে, দারিদ্র্য আমাদের খুব অল্প বয়সেই আমাদের দায়িত্বের বোঝা বহন করতে শেখায়। সত্যম এত অল্প বয়সে তার দায়িত্ব বুঝে এবং তার বাবাকে সাহায্য করার জন্য স্কুল থেকে ফিরে এসে পেন্সিল বিক্রি করে। এই ঘটনার ভিডিও সামনে আসতেই চোখে জল নেটিজেনদের। দেখুন ভিডিও:
দ্য ইন্ডিয়ান স্টোরিজকে তিনি এমনটাই জানিয়েছেনপেন্সিলবিক্রি করে তারা প্রতিদিন মাত্র ১৫০ টাকা আয় করে।দ্য ইন্ডিয়ান স্টোরিজ-এর সঙ্গে আলাপকালে সত্যম কুমার জানান, তাঁর স্বপ্ন পড়াশোনা করে বিজ্ঞানী হওয়ার। এর সাথে সত্যম বলেছেন যে বিজ্ঞানী হওয়ার পরে তিনি তার বাবা-মায়ের জন্য একটি বাড়ি তৈরি করবেন কারণ তাদের নিজস্ব বাড়ি নেই এবং একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন।
জীবনের কঠিন লড়াইকে পেরিয়ে তার বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন কি সে পূরণ করতে পারবে আদৌ ? কারণ বিজ্ঞানী হবার লড়াই সেটা তো অনেক দূর আপাতত দুবেলা দুমুঠো অন্য সংস্থা এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সেটা একটা লড়াই। কারণ এরকম পরিবারে অনেক ক্ষেত্রেই বাবাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য ছেলেদের একটু বড় হলেই কাজে-কর্মে মন দিতে হয় শেষ হয়ে যায় তাদের ডাক্তার, বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন।