বাবা নেই,গরীবের সংসার,মা পালতো ছাগল,মায়ের কষ্টের দাম দিল ছেলে,যা করে দেখালো,স্যালুট নেটিজেনদের

কথায় আছে কোনো জিনিসকে পাওয়ার বাসনা যদি মন থেকে করা হয় এবং সেটি পাওয়ার জন্য সঠিক পরিমানে পরিশ্রম করা হয় তবে অবশ্যই সফলতা অর্জন করা যায়। অর্থাৎ ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। এই বাক্যটিকে বাস্তবে প্রমান করে দেখিয়ে দিয়েছে বিশাল নামের এক যুবক।বিশালের জন্ম হয়েছিল মুজ্জফরপুরের মুকসুদপুর গ্রামের এক গরিব পরিবারে। ২০০৮ সালে যখন বিশালের বাবা মারা যায় তখন বিশালের পরিবারের অবস্থা আরো বেশি খারাপ হয়ে গেছিল। বিশালের পিতা মারা যাওয়ার পর বিশালের মা রীনা দেবী গরু-মোস পালন করা শুরু করেছিল এবং গরু-মোসের দুধ বিক্রি করে সংসার চালাতো।

২০২২ সালে যে ইউপিএসসি রেজাল্ট বেরিয়েছে সেখানে অনেক ছাত্র-ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে এইবার। যার মধ্যে প্রথম চেষ্টায় ইউপিএসসি পরীক্ষা পাশ করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন বিশাল। তিনি ৪৮৪ রেংক নিয়ে পাশ করেছেন। তবে জানিয়ে দি বিশালের পক্ষে এই সাফল্য অর্জন করা মোটেই সহজ ছিল না কারণ তিনি খুব দরিদ্র পরিবারের একটি ছেলে। তার মা গরু পালন করে কোনোরকমে ঘর চালান। এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষার ফি দেওয়ার মতো টাকাও তার কাছে ছিল না। কিন্তু বিশাল পরিস্থিতির কারণে হাল ছাড়েননি এবং ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। নিচে রইলো সেই ভিডিও যেখানে তার বাড়ির অবস্থা দেখলে আপনারা চোখে জল আসবে।

```

বিশালের দারিদ্রতার কাহিনী

বিশালের পিতা মারা যাওয়ার পর বিশালের মা রীনা দেবী গরু-মোস পালন করা শুরু করেছিল এবং গরু-মোসের দুধ বিক্রি করে সংসার চালাতো। পরিবারের আর্থিক অবস্থা অতিরিক্ত খারাপ হওয়ায় বিশাল তাড়াতাড়ি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করতে চেয়েছিল। ২০১১ সালে বিশাল ম্যাট্রিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং ২০১৩ সালে তিনি আইআইটি কানপুরে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর ২০১৭ সালে ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন তিনি। ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পূর্ন করার পর বিশাল রিলায়েন্সে চাকরি শুরু করেছিলেন। কিন্তু বিশালের শিক্ষক চেয়েছিলেন বিশাল চাকরি ছেড়ে ইউপিএসসি-এর জন্য প্রস্তুতি নিক। বিশাল তার শিক্ষকের কথার মান রাখেন এবং ইউপিএসসি-এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন।

শিক্ষক নেন বিশালের পড়াশোনার দায়িত্ব

বিশাল যেহেতু ইউপিএসসি-এর পড়াশোনা করার জন্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন সেই কারণে তার আর্থিক অবস্থা প্রচন্ড খারাপ হয়ে গেছিল। এমনকি বিশালের কাছে ইউপিএসসি পড়াশোনা করার জন্য ও পরীক্ষার ফিস ভরার জন্য কোনো অর্থ ছিল না। তাই বিশালের শিক্ষক গৌরী সংকর তার পড়াশোনার খরচের ভার তুলে নিয়েছিলেন।

```

শুধু তাই নয় পরীক্ষার প্রস্তুতি চলাকালীন সময় বিশাল তার শিক্ষকের বাড়িতেই থাকতেন। বিশালের শিক্ষক আর্থিক ও মানসিকভাবে তার মনে সাহস বৃদ্ধি করাতেন। এমনকি বিশালের বাবাও সবসময় চাইতেন তার ছেলে পড়ালেখা করুক এবং ভালো চাকরি করুক। তাই বিশাল দিনরাত পরিশ্রম করেন এবং ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

বিশালের কঠোর পরিশ্রমের ফল হল সে প্রথম চেষ্টাতেই সাফল্য পেয়েছে। বিশালের মা ও শিক্ষক খুব খুশি। শুধু তাই নয় গ্রামের লোকেরাও বিশালকে নিয়ে খুব গর্বিত বোধ করছেন এবং তারা সবাই মিষ্টি নিয়ে বিশালকে অভিনন্দন জানাতে তার বাড়িতে পর্যন্ত এসেছিল।