গত ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে কেমব্রিজের কৃতী ড. ঋষি রাজপোপাটের (২৭) পিএইডির গবেষণাপত্র। যেখানে তিনি দাবি করেছেন যে সংস্কৃতের বৃহত্তম ধাঁধা তিনি সমাধান করেছেন। এই ধাঁধার উল্লেখ আছে বৈয়াকরণ পাণিনির অষ্টাধ্যয়ীতে। যীশুখ্রিস্টের জন্মের ৪০০ বছর আগে মহর্ষি পাণিনি ওই গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে ঋষি রাজপোপাটের সমাধানকে বৈপ্লবিক বলে দাবি করেছেন। আর, এর ফলে এবার পাণিনির ব্যাকরণ কমপিউটারের মাধ্যমে শেখানো সহজ হবে।
সমস্যাটা কী?আজ থেকে প্রায় ২,০০০ বছর আগে অষ্টাধ্যয়ী লেখা হয়েছিল। সংস্কৃত কীভাবে লিখতে-পড়তে হবে, ভাষাবিজ্ঞানের সেই পাঠ দিয়েছিল এই বই। এটি ভাষার ধ্বনিতত্ত্ব, বাক্য গঠন এবং ব্যাকরণের গভীর বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। যে কোনও সংস্কৃত শব্দে মূল এবং প্রত্যয় কীভাবে যোগ করা যেতে পারে এবং ব্যাকরণগত সঠিক শব্দ ও বাক্য কীভাবে গঠন করা যায়, তার হদিশও এই বইয়ে আছে। এই ব্যাপারে পাণিনি মোট ৪,০০০ নিয়ম তৈরি করেছিলেন। কিন্তু, পণ্ডিতরা পড়ে দেখেছেন যে এই বইয়ে লেখা দুই বা ততোধিক নিয়ম একটা বাক্য তৈরিতে প্রযোজ্য হচ্ছে। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধন্দ।
পাণিনি যা বলেছিলেনসেই ধন্দ দূর করার ব্যবস্থাও পাণিনি করে গিয়েছেন। তিনি একটি মূল নিয়ম তৈরি করেছিলেন। যেগুলো হল- এক ক্ষেত্রে যদি তাঁর লেখা ব্যাকরণের দুটি নিয়ম কার্যকরী হয়, তবে সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় নিয়মটি চর্চাকারীদের গ্রহণ করতে হবে বা মানতে হবে। কিন্তু, তারপরও ধারাবাহিকভাবে সেই নিয়ম কার্যকর করার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা থেকে যাচ্ছিলই। যার ফলে বাড়ছিল ব্যতিক্রমের সংখ্যা। তাঁর আবিষ্কারের মাধ্যমে সেই সমস্যাই দূর করলেন ড. ঋষি রাজপোপাট।
রাজপোপাটের সমাধান‘পাণিনি উই ট্রাস্ট’ শিরোনামে তাঁর থিসিসে, ড. রাজপোপাট একটি সরল পথ দেখিয়েছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে এতদিন পর্যন্ত পাণিনির শেখানো মূল নিয়মকেই আমরা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি। রাজপোপাটের দাবি, পাণিনি দুটি নিয়ম কোনও একটি ক্ষেত্রে কার্যকর হলে, পরবর্তী নিয়ম ব্যবহার করতে হবে, এমনটা বলেননি।
তিনি আসলে বলতে চেয়েছেন যে কোনও একটি বাক্যের ডান এবং বাম দিকের শব্দের জন্য শব্দের জানানপাণিনি আসলে যা বোঝাতে চেয়েছিলেন, একটি শব্দের বাম এবং ডান দিকে প্রযোজ্য নিয়মগুলির জন্য, পাঠকদের ডানদিকের নিয়ম ব্যবহার করা উচিত।